Wednesday, August 14, 2019

মেঘ রৌদ্দুরের গল্প

মেঘ রৌদ্দুরের গল্প!

---Md Fojle Rabby

বুকের উপর থেকে শাড়ির আচলটা টান দিতেই মেয়েটা কেমন যেন কেঁপে ওঠল। হাত দিয়ে শাড়ির আচলটা আকটাতে চেয়েও আকটালো না। মেয়েটার চোখের কোণে পানি এসে গেল। মুখটা লালবর্ন ধারণ করেছে। পিংক কালারের লিপস্টিক দেওয়া ঠোঁটজোড়া কাঁপছে। দেখেই লিপস্টিকের উষ্ণ ছোঁয়া নেওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠছে।
আমার সেই দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই! আমার দরকার মেয়েটার শরীর কেনই না? কারণ মেয়েটাকে এক রাতেই জন্য ভাড়া করেছি। দেখতে খুব সুন্দর যে কোন পুরুষের দেখলেই কামতারণা জাগবে।

মেয়েটার বুক থেকে, কাপড়টা সরাতে সরাতে, মেয়েটা চোখ বন্ধ করে নিল, আমি নিজের অজান্তেই মেয়েটার গোলাপের পাপড়ীর মতো ঠোঁটের সাথে ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিলাম! মেয়েটার চোখের কাজলগুলো লেপ্টে যাচ্ছে। কিন্তু আমাকে সরানোর ক্ষমতা তাঁর নেই। কারণ পতিতাদের সে ইচ্ছা থাকলেও ক্ষমতা থাকে না।

হঠাৎ বিছানা কাপতে লাগল। চেয়েই দেখে বালিশের সাইডে, মেয়েটার ফোনটা কাঁপছে।

"কিছু যদি মনে না করেন ফোনটা ধরতে পারি" ( মিনতীর সুরে কথাটা বললো)

আরো কোন জায়গায় কন্টাক্ট রাখছিস নাকি আজকে আরো?সেখান থেকে কী ফোন দিয়েছে? ( আমি)

মেয়েটা কেমন যেন করুণভাবে তাকালো। ( মনে হচ্ছে এই চাহনীর মাঝে যে কেউ নিজেকে মুর্হূতের মাঝেই হারিয়ে ফেলবে)

আচ্ছা! ফোন ধর, তবে আমার সামনে কথা বলতে হবে।( আমি)

মেয়েটা মুচকি হাসলো,চোখের পানিগুলো চিকচিক করছে।

মেয়েটা ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে এক ছোট বাচ্চা কণ্ঠ শুনতে পেলাম।

ফোনের ওপাশ থেকে কে যেন বলছে" আপু তুমি কখন আসবে? জানো আপু মা না কেমন যেন করছে। ডাক্তার আঙ্কেল বলছে" টাকা না দিলে মাকে আর চিকিৎসা করবে না ।মা'কে চিকিৎসা না করলে , মা বাঁচবে না আপু। আপু তুমি কখন আসবে টাকা নিয়ে।.

হ্যাঁ, জান্নাত আমার কলিজার টুকরা আমি না অনেক বড় একটা কাজ করতেছি, কাজটা শেষ হলেই, তোর জন্য চকলেট আর মায়ের চিকিৎসার টাকা নিয়ে আসব। আর আমার ময়নাপাখিটা এখনো ঘুমায়নি কেন? আর হ্যাঁ জান্নাত আজকেও কি তোর কোমড়ের বাম সাইডে ব্যাথা উঠেছিল? ( মেয়েটা)

হ্যা আপু দুপুরে অনেক পেইন করেছিল। পরে ওষুধ এনে দিয়েছিলে না তুমি সেটা খেয়ে ভালো হয়ে গেছে। আচ্ছা! আপু তুমি কি কাজ করো? আমিও করবো, আমরা দু'বোন যদি কাজ করি, তাহলে মা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে তাই না? আপু বলো না তুমি কি এমন বড় কাজ করছো, এতো টাকা দিবে, বলো না আপু? দু'বোন মিলে কাজ করবো, আমাকে করতে দিবে, তো?( জান্নাত)

মেয়েটার দিকে তাকালাম, মেয়েটা কাঁদছে। যাকে বলে চাঁপা কান্না। চোখের পানি মুছে বলতে লাগল" না আমার ময়নাপাখিটার কাজ করতে হবে না, চুপ আর কোনদিন কাজ করার কথা বলবি না। আমি কি মরে গেছি। তুই কান্না করছিস কেন? জান্নাত তুই একদম কাঁদবি না! ( মেয়েটা)

আপু তুমি কখন আসবে, জানো না তোমার গলা জড়িয়ে না ঘুমালে আমার ঘুম হয় না! ( জান্নাত)

ময়নাপাখি রাগ করো না, আজকে রাতে যে আমার ময়নাপিখিটার সাথে ঘুমাতে পারবো না, । আজ সারারাত কাজ করবো, তা না হলে যে টাকা পাবো না। ( মেয়েটা)

আপু ভাল মেয়েরা রাত জেগে কাজ করে না। মা বলতো না যে" ভালো মেয়েরা সন্ধ্যার পর বাড়ির বাহিরে থাকে না, তুমি কেন বাহিরে থাকবে। আপু তুমি কষ্ট পেয়ো না, জানো আজ আমার টিচার ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে বলেছে তুমি নাকি খারাপ কাজ করো। তাই আমাকে পড়াবে না, আমি বলেছি আমার আপু দুনিয়ার শেষ্ঠ আপু। আমার আপু সত্যিই অনেক ভালো আপু। আমি ঠিক বলেছি না? বল আপু তোমার ময়নাপাখি ঠিক বলেছে? আপু যখন তোমার নামে পঁচা কথা বলেছে তখন না আমার খুব কষ্ট হয়েছে। আপু তুমি কখন আসবে, তুমি রাতে যদি না আসো তাহলে খাবো না।( জান্নাত)

আপু তুমি খেয়ে নাও, আমি রাতেই আসবো কেমন। এখন কাজ করতে হবে। ( কথাটা বলে ফোনটা রেখে দিল)

আমি বিছানায় এক কোণায় বসে কথাগুলো শুনছিলাম।

সরি ক্ষমা করবেন, ছোট বোনটার সাথে কথা বলতে গিয়ে লেট হয়ে গেল। কি করবো বলেন, বোনটার কিডনির সমস্যা! আচ্ছা বাদ দেন, রাত দশটা বাজে, কি করবেন করেন, কথাটা বলে শাড়িটা খুলতে লাগল।

আমি, মেয়েটার খুলা শাড়িটা, ফ্লরে থেকে নিয়ে কুচি দিয়ে পড়িয়ে দিলাম।যখনি কুচিটা নাভির নিচে নিজের অজান্তেই গুজে দিতে গেলাম মেয়েটা কারেন্ট শর্ক করার মতো কেমন যেন কেঁপে ওঠল। আমি শাড়িটা পড়িয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হওয়ার সময় মেয়েটা বলল" কি হলো কিছু করবেন না? আপনার আজ যা মন চাই তাই করতে পারেন, কোন বাঁধা দিবো না। কিন্তু প্লিজ দশ হাজারের কম টাকা দিবেন না। কোথায় যাচ্ছেন আপনি?

ঠাস- ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলাম । মেয়েটা মাথা নিচু করে কাঁদছে। এই মেয়ে তোর মতো মেয়ের সাথে আমি রাত কাটাতে পারবো না।
আমার কথাটা শুনে মেয়েটার মাথায় যেন ভাঁজ ভেঙ্গে পড়লো। চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল" আমাকে কি পছন্দ হয়নি? প্লিজ আপনার যা মন চায় করুন। আমার টাকাটা খুব প্রয়োজন। এতো রাতো কোন কাস্টমার পাওয়া যাবে না। কথাটা বলেই মেয়েটা পায়ে জড়িয়ে ধরে ফেলল।

আমি আকস্মিক ঘটনায় বিস্মিত হলাম!একটা মেয়ে নিজের সতিত্ব বিক্রি করার জন্য পাঁয়ে পর্যন্ত ধরে, কতটা কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়ালে। মেয়েটাকে পাঁয়ে থেকে তুলে বললাম" আমি আপনার সাথে কন্টাক্টের টাকা'টা ঠিকই দিবো।
তবে, আপনি কেন নিজের ইচ্ছায় নারীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বিলিয়ে দেওয়ার জন্য আমার পাঁয়ে পড়ছেন। সেই কারণটা বলতে হবে। তা নাহলে এখনি আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাবেন। ( আমি)

মেয়েটা আমার কথা শুনে চোখের পানি মুছে বলতে লাগল, তাহলে শুনুন কেন আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি মূল্যবান সম্পর্দ বিলিয়ে দিচ্ছি!
" আমার নাম কারিমা জাহান ( কথা)। সবার কথা বলেই ডাকে। গ্রামে জন্ম, আমার বাবা একটা বেসরকারি চাকরিজীবি। খুব ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ আমাদের জীবনে নেমে আসলো অন্ধকারের কালো ছায়া আমি তখন, এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছি। রেজাল্ট আসল A+। স্কুল থেকে খুশি মুখে বাসায় এসে দেখি বাড়ি ভর্তি অনেক লোক। লোক সরিয়ে যতই সামনে যাচ্ছি ততই মায়ের কান্না শুনতে পাচ্ছি। হঠাৎ যা দেখলাম আমার হাত থেকে রেজাল্ট সীর্ট'টা মাটিতে পড়ে গেল। পৃথিবীটা আমার মাথায় উপর ঘুরছে, পায়ের নিচে মাঁটি সরে যাচ্ছে। কারণ মা-বাবার লাশকে সামনে নিয়ে কাঁদছে। ছোট দুই বছরের বোন জান্নাত মায়ের পাশে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে। আমি এসব দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। শুনেছি দুইদিন পর জ্ঞান ফিরে। বাবাকে শেষ দেখাটাও হয়নি। কাকারা চক্রান্ত করে বাড়ি ছাড়া করে। শহরে এসে টিউশনি করে কোনমতো, অনার্সটা কমপ্লিট করি। কতো জায়গায় চাকরি খুঁজেছি পায়নি, দুই জায়গায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর প্রস্তাব করেছিল। সেখান থেকে এসে পড়ি। আর চাকরি খুঁজিনি। এদিকে সজিব আঙ্কেলের পাঁচ বছরের একটা মেয়েকে পড়াতাম। কিন্তু একদিন নিঝুম( আমার ছাএী) তাঁর মায়ের সাথে নানী বাড়ি চলে গেলে, তাঁর বাবা একাই থাকেন। আমি বাসায় গেলে সে সুযোগে, আমার সাথী অশ্লীল কাজ করতে চায় জোর করে। আমি কোনমতে সম্মান নিয়ে পালিয়ে আসি তারপর আর সেখানে যায়নি। হঠাৎ একদিন বোনটা স্কুল থেকে আসার পর সেন্সলেন্স হয়ে যায়, ব্যাথায়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে শুনতে পারি কিডনীর সমস্যা। ছয়মাসের মাঝে কিডনী প্রতিস্হাপন করতে হবে।নইলে ছোট বোনটা বাঁচবে না। এদিকে মা দুই বছর ধরে প্যারালাইস্ট হয়ে আছে। মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা লাগে। দিনে চারটা টিউশনি করায়।তা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা আর সংসার বেশ চলে যেত। কিন্তু ইদানিং মায়ের অসুস্থতা বেড়ে যায়। সাথে বোনটা দিনদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে কালকের মাঝে হসপিটালে যদি দশহাজার টাকা না দিতে পারি, তাহলে মাকে বের করে দিবে। তাই বাধ হয়ে এ কাজে জড়িয়ে নিয়েছি। আর আমার শরীরে প্রথম স্পর্শ কারী আপনি। আজকের রাতের পর চিরদিনি আপনার নামটা হৃদয়ে ক্ষুধায় করা থাকবে। কারণ আপনাকে আমার সতিত্বটা প্রথম বিলিয়ে দিচ্ছি। এখন তো সব শুনলেন। এখন আপনি আমার গায়ে, পতিতার ছাপ লাগিয়ে দিতে পারেন, কোন আফসুস নাই। মা আর বোনের হাসির কাছে আমি শতবার নিজের সতিত্ব বিলিয়ে দিতে পারি। (কথা)

মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ভাবছি, একটা মেয়ে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। হয়তো মেয়েটাকে না দেখলে বুঝতাম না।

আমি মেয়েটার কাছে যাচ্ছি, মেয়েটা চোখ বন্ধ করে আছে। জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ঘরে প্রবেশ করছে। এক অপরুপ সৌন্দর্য মেয়েটার উপর এসে ভীড় করছে। অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছি, মেয়েটার মাতাল করা চুলের গন্ধ বাতাসে ভেসে আসছে। আমি মেয়েটার অনেক কাছে এখন মেয়েটার নিঃশ্বাস আমার মুখে পড়ছে। মেয়েটা ভাবছে মেয়েটাকে লিপ কিস করবো, মেয়েটার ঠোঁট জোড়া কাপঁছে , চোখের কোণ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমি খপ করে মেয়েটার শাড়ির আচল'টা ধরে ফেললাম। মেয়েটার চোখ থেকে টুপ-টুপ করে পানি পড়তে লাগল।অামি শাড়ির আচল'টা টান দিয়ে মেয়েটার মাথায় তুলে দিলাম। ঘোমটাতে মেয়েটাকে অনেক সুন্দর লাগছে। মেয়েটার ঠোঁটের কোণে হাসি দেখলাম।

 মেয়েটার কোমড়ের কাছে একটা হাত আমার। আরেকটা হাত মেয়েটার এলোকেশে। আমি মেয়েটার অনেক কাছে চলে এসেছি । এখন মেয়েটার গরম নিঃশ্বাস আমার মুখে পড়ছে। মেয়েটা ভাবছে মেয়েটাকে লিপ কিস করবো, মেয়েটার ঠোঁট জোড়াও কাপঁছে , চোখের কোণ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
আমি খপ করে মেয়েটার শাড়ির আচল'টা ধরে ফেললাম।
মেয়েটার চোখ থেকে টুপ-টুপ করে পানি পড়তে লাগল।অামি শাড়ির আচল'টা টান দিয়ে মেয়েটার মাথায় তুলে দিলাম।
ঘোমটাতে মেয়েটাকে অনেক সুন্দর লাগছে। মেয়েটার ঠোঁটের কোণে হাসি দেখলাম "

পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর লাগে হয়তো মেয়েদের বাঁকা ঠোঁটের হাসি।

আমি জিসান আহম্মেদ রাজ! আচ্ছা আপনাকে কি আমি নাম ধরে ঢাকতে পারি?( আমি)

হুম,আজকে রাতের জন্য আমি শুধু আপনার। আমার শরীরের প্রতিটা অংশের ন্যায্য দাবিদার আপনি! যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন!
.হঠাৎ,ঘরের কাঁটা জানান দিল, রাত ১২ বাজে। কথা বলল" রাত আর বেশি নেই, আমাকে ভোরে চলে যেতে হবে, এখনো আপনিতো কিছুই করলেন না! প্লিজ আর সময় নষ্ট না করে আপনি যে কাজের জন্য এখানে এনেছেন, সে কাজটা পূর্ণ করেন। সময় হয়তো বেশি নেই!( কথা)

ক্ষমা করবেন, আমি পুরুষ তবে কাপুরুষ নই! আপনি ঘুমান আমি আসি!

আজকে রাতের জন্য আমি শুধু আপনার!কথাটা বলে বুকের উপর থেকে শাড়িটা সরিয়ে ফেলল।আমার চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে আসল। আমি বুঝতে পারছি, এক অসহায় মেয়ে তাঁর মূল্যবান সম্পর্দ নিজ হাতে আমাকে তুলে দেওয়ার জন্য অগ্রসর হচ্ছে । এদিকে কথা আমার কাছে এসেই আমার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট জোড়া মিলানোর আগেই ধাক্বা দিয়ে ফেলে দিলাম।

আপনাকে না বললাম আপনার সাথে কিছু করতে পারবো না।

আপনি তো আমাকে কন্টাক্ট করেছেন এক রাতের জন্য। আচ্ছা, আমার সাথে কন্টাক্ট করার টাকা'টা তো দিবেন?টাকা টা না হলে মায়ের কিছু একটা হয়ে যাবে। প্লিজ আপনি আমাকে যে কাজের জন্য নিয়ে এসেছেন সে কাজ করেন, তবুও আমার টাকা'টা দেন। ( করুণস্বরে বলল)

বুঝতে পারলাম মেয়েটা, টাকার জন্য এসব করছে। হায়রে পৃথিবী কেউ টাকার জন্য, এসব করে, আবার কেউ আধুনিকতার জন্য।

আমি পকেট থেকে দশ হাজার টাকার ফাইলটা বের করে দিয়ে বললাম" এই নেন টাকা আর ভয় পাইতে হবে না"! আপনাকে একটা কথা বলবো?

পতিতাদের কাছে অনুমতি চাইতে হয় না! বলেন কি বলবেন?

আপনি কি সারাজীবনের জন্য আমার হয়ে থাকতে পারবেন?

একি বলছেন, এ কথা মুখে নেয়াও পাপ! পতিতারা ভোগের পাএী, যত পারেন তাদের ভোগ করেন। তাঁরপর টিস্যুর মতো ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেনন ডাস্টবিনে। পতিতাদের সংসার করার স্বপ্ন তো দূরের কথা কাউকে ভালবাসাও অন্যায়। আমাদেরও ইচ্ছে করে, কাউকে ভালবাসতে। কারো কাঁধে মাথা রেখে চাঁদের জোৎস্না দেখতে। মাঝরাতে গাঁ ঘেষে বসে পুকুরের পানিতে আলতা রাঙা পাঁ ডুবিয়ে প্রিয় মানুষটার মুখে, ভালবাসার গল্প শুনতে। মন চাই একটা ছোট্ট সংসার করত যে সংসারে সবকিছুর অভাব থাকলেও থাকবে না কোন ভালবাসার অভাব। কিন্তু এসব স্বপ্ন দেখি নিছক বোকামী। আমার ছোটবোন, কি বলেছিল শুনছেন" আমার ছোট বোনটাকে নাকি তার টিচার স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে! কেন জানেন? সেই স্কুলের শিক্ষিকা হচ্ছেন সজিব আঙ্কেলের স্ত্রী! আর সজীব আঙ্কেল সেই দিনের ঘটনা উল্টা করে বলেছিল তাঁর স্ত্রীকে। নিশি আন্টি জানে যে আমি তাঁর স্বামীর সাথে অশ্লীল কাজ করতে চেয়েছিলাম। শুনেন আপনার যদি মন চাই আমাকে ভোগ করার যা ইচ্ছা করতে পারেন।যেভাবে ইচ্ছা নিজের কামতারণা মেটাতে পারেন আজকের রাতে।আমি চাইনা আমার অনিশ্চিত জীবনের সাথে আপনাকে জড়াতে। জানেন আজ আমি পতিতা না হয়েও এ অন্ধ সমাজের কাছে কলগার্ল! আল্লাহর কসম, আমার জীবনের আপনিই প্রথম পুরুষ যায় ঠোঁটের ছোঁয়া আমার ঠোঁঠে প্রথম স্পর্শ করেছে। যে আমার শারীরীক গঠন কিছুটা দেখেছে। কিন্তু এ ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না, অসুস্থ মা আর বোনকে বাঁচাতে নিজেকে কুরবাণী দেওয়া ছাড়া।আপনার নামটা আর ছবিটা হৃদয়ে অঙ্কিত করে নিলাম। কাল থেকে হয়তো অন্য কারো বিছানায় নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজেকে সর্পে দিতে হবে। আচ্ছা বাদ দেন, আপনি কাঁদছেন কেন ছেলে মানুষের কাঁদতে হয় না ( কথা)

আমি না হয় কাঁদছি তুমিও তো কাঁদছো। জানো ছোটবেলায় মা মরে যায়! কোটিপতি বাবার এক ঘন্টা সময় হয়নি দিনে আমার সাথে কাঁটাবার। আমার বয়স যখন পাঁচবছর তখন বাবা আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসে। আমি পেলাম নতুন মা। নতুন মা টা অনেক ভালো ছিল যে, কথায় কথায় আমাকে বলতো তোর মা'টা নষ্টামি করে তোর মতো কুলাঙ্গার জন্ম দিয়েছে। তখন বয়স ৭ বছর একটু বুঝতে শিখেছি। বাবার সাথে কোন কথা বলতাম না। ১১ বছর বয়সে লন্ডনে চলে যায়।পড়ালেখায় সুযোগে, কণা নামের একটি মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। সেখান থেকে ভালোলাগা তাঁরপর ভালবাসা! মনে করেছিলাম, তাঁকে আকড়ে ধরেই নিজের কষ্ট ভুলে থাকবো, কিন্তু না, সে আমাকে ব্যবহার করেছিল,। আজ তাঁর বিয়ে, আজকের রাতেই ফুলশর্য্যা।জানেন তাকে এতটা ভালোবাসতাম তার জন্য কত মেয়েকে ইগনোর করেছি, কখনো কারো দিকে তাকাতাম না! কিন্তু সে কি করলো, অন্য ছেলেকে বিয়ে করে নিলো।

তাই মনের ক্ষুভে ভেবেছিলাম " যদি আজকের রাতটা কারো সাথে কাটানো যায় কষ্টটা যদি লাঘব হয়। তাই আপনার সাথে দেখার, এবং এ পর্যন্ত আসা। কি হলো কাঁদছেন কেন। তবে আপনার মতো, আমিও জীবনের প্রথম আপনার ঊষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়া পেলাম। আচ্ছা আপনি কি সারাজীবনের জন্য আমার হয়ে থাকবেন?( আমি)

মেয়েটা চোখের পানি মুছে বললো" হুম পারি একশর্তে তা হলো, আমাকে সারাজীবন ভালোবাসতে হবে "।
আমি কিছু না বলে, শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। মনে হচ্ছে এ পাওয়া পরম সুখের পাওয়া, পরম সৌভাগ্যের পাওয়া। দৈহিক মিলনের মাঝে সুখ অাছে, আছে কামতারণা মেটানোর প্রয়াস কিন্তু আত্নিক মিলনের মাঝে আছে পরম শান্তি। যা সকল ভালবাসার উর্ধ্বে। আলতো করে কথার কপালে চুমু একে দিলাম! কথা খুব কাঁদছে আমার শার্টটা তাঁরর চোখের সমুদ্রে নোনা জলে ভিঁজে যাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আমি পেয়েছি, তাঁকে, যাকে কবি জীবনান্দ দাশ না দেখে তাঁর সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছিল। দেখতে দেখতে জীবনের শ্রেষ্ঠ রাতটি পার করে দিলাম। পরের দিন সকালে, কথাদের বাসায় গিয়ে কথার মায়ের চিকিৎসা এবং জান্নাতের চিকিৎসার সবকিছু ব্যবস্থা করলাম।

ইনশা-আল্লাহ্ ছয়মাস পর সবকিছু ঠিক-ঠাক। জান্নাত আর কথার মা পুরোপুরি সুস্থ। মোটামুটি খুব জমকালো ভাবেই বিয়েটা হয়ে গেল। আজ আমাদের বাসর রাত। কথার লাল বেনারশি পড়ার কথা থাকলেও, আমার পছন্দমতো নীলশাড়িতে নিজেকে আবৃত্ত করে। নীল চুড়ি, চোখে কাজল সবকিছু মিলে মনে হচ্ছে নীল পরী। আমি বিছানায় বসতেই আমার পায়ে সালাম করলো। আমি কথাকে নিজের বুকে টেনে নিলাম। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আলতো করে কপালে ভালবাসার স্পর্শ এঁকে দিলাম। আস্তে আস্তে কথার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম।

দিনগুলি ভালোই কাটছিল। কথা অন্তঃসত্ত্বা, খবরটা শুনে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি মনে হয়েছিল। দেখতে দেখতে নয়মাস পার হয়ে দশমাস চলছে! কথা বললো আজ তাঁর শরীরটা "খারাপ লাগতেছে, আমি যেন অফিস না যায়!

বিকালে কথাকে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে গেলে, ডাক্তার বললো, অপরাশেন করতে হবে। রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল। অপরেশন থিয়েটারে যাওয়ার আগে কথা শক্ত করে হাঁতটা চেঁপে ধরেছে। চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে। ছোট্ট ছোট্ট করে বলছে" জানো রাজ, আমার না তোমাকে ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না, আমার খুব ভয় হচ্ছে, আচ্ছা রাজ আমি যদি মরে যায় তাহলে কি তুমি আরেকটা বিয়ে করবে? আমি ভালবাসার ভাগ অন্য কাউকে দিয়ে দিবে? আমার ভালবাসার ভাগ আমি হারিয়ে গেলে কাউকে দিয়ো না! কথা দাও আমি হারিয়ে গেলে নতুন কাউকে বিয়ে করলেও, তাঁকে কলিজার টুকরা বলে ডাকবে না! কেমন? আমি মনে হয় তোমাকে হারিয়ে ফেলবো! এই কাঁদছো কেন তুমি। আমি মরে গেলেও আমার আত্মাটা তোমায় সবসময় ভালোবাসা দিয়ে ঘিরে রাখবে।( কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বললো কথা)

এই কলিজার টুকরা, তুমি জানো না তোমাকে ছাড়া নিজেকে ভাবতে পারি না, তোমার কিছুই হবে না। তুমি এমন বাজে কথা বলবে না! এদিকে ডাক্তার'রা কথাকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে চলে গেল।

আমি বাহিরে দাঁড়িয়ে পাঁয়চারী করছি, হঠাৎ ডাক্তার দরজা খুলতেই দৌঁড়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম! ডাক্তার চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললো, সরি মিঃ রাজ সন্তানকে বাঁচাতে পারলেও মাকে বাঁচাতে পারলাম না। আপনার স্ত্রী মরার আগে ওয়াদা করিয়ে দিয়েছিল, তাঁর জীবনের বিনিময়ে হলেও তাঁদের সন্তানকে বাঁচাতে। কারণ তিনি আর মা হতে পারবেন না। সরি, আমাদের কিছু করার ছিল না।

ডাক্তারের কথাটা শুনে পায়ের নিঁচের মাটি সরে যেতে লাগল। মনে হচ্ছে কলিজাতে কেউ ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। বুকের মাঝে চিনচিনে ব্যাথা করছে। দৌঁড়ে গেলাম কথার বেডে। বাচ্চাটা কথার পাশে রাখা। বাচ্চাটা কাঁদছে, কথার মুখটা সাদা কাপড়ে ঢাকা। কাপড়'টা তুলতেই চোখ থেকে টপ-টপ করে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগল।কি সুন্দর মাযাবি মুখখানা মলিন হয়ে পড়ে আছে। কাজল কালো চোখদুটি দিয়ে আর কখনো তাকাবে না আমার দিকে। হাজারো স্মৃতি ভেসে উঠছে স্মৃতির পাতায়।বাচ্চাটা কাঁদছে, হঠাৎ মনে হলো, কথা বলতেছে" আমাদের দুজনের কলিজার টুকরাটাকে বুকে নিবে না! বাচ্চাটার দিকে তাকাতেই দুচোখ ভরে গেল জলে, কি ভাগ্য নিয়ে এসেছিস জন্মের পর মায়ের দুধটুকুও খেতে পারলি না।

আর কাঁদিস না আজ থেকে তোর নাম রৌদ্দুর! তুই যে আমার আষাড়ো ঘনবরষায় বেঁচে থাকার আশার আলো। মেঘের মাঝে তুই যে রোদ্দুর হয়ে আসলি। এই বলে আমাদের দুজনের কলিজার টুকরা ছেলেটাকে গালে মুখে চুমু দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলাম।

No comments:

Post a Comment